মেহেরপুর জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত | মেহেরপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি 2024

মেহেরপুর জেলা বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। মহান মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিবিজড়িত স্বাধীনতার সূতিকাগার জেলা এই মেহেরপুর।

এ জেলা বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক জেলা যার মোট আয়তন ১৩৩৭.৩৫ বর্গ কিলোমিটার। ২০২২ সালের হিসাবে এর জনসংখ্যা ৭ লক্ষ ৫ হাজার ৩৫৬ জন। এ জেলায় ১৬টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা, ৯৯টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং১১১৭টি গ্রাম রয়েছে।

মেহেরপুর জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

মেহেরপুর জেলা মূলত ঐতিহ্যবাহী রসকদম্ব, আমড়া এবং সারিত্রি মিষ্টির জন্য বিখ্যাত। মুক্তিযুদ্ধের নানান কর্মকাণ্ডের জন্যও বিখ্যাত এই মেহেরপুর। এখানকার মিষ্টি আম ও সারিত্রি খেতে সুস্বাদু বলে সবার কাছে সুপরিচিত। তৎকালীন অস্থায়ী সরকারের শপথপাঠ করানো হয় মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার এক আমবাগানে ।এইজন্য মেহেরপুর সবার নিকট পরিচিত।

জেনে নিনঃ কোন জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

এই জেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত, যেখানে সবুজ মাঠ, ঝিরিঝিরি নদী এবং পাহাড়ি টিলার মত অনেক সুন্দর নিদর্শন রয়েছে। তাছাড়াও মেহেরপুর মিষ্টি সাবিত্রি, রসকদম্বব ও আমড়ার জন্য বিখ্যাত www.meherpur.gov.bd এই ওয়েবসাইট এ এই জেলার সকল তথ্য সংরক্ষিত আছে।

মেহেরপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি

মেহেরপুরের একটি সমৃদ্ধ এবং বর্ণাঢ্য ইতিহাস রয়েছে। এ জেলার অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলেন স্বামী নিগমানন্দ, দিরেন্দ্র কুমার রায়, শাহ আলাই এবং মেহের আলি খান।

মেহেরপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামঃ

  • স্বাধীনতা সংগ্রাম পুরস্কারপ্রাপ্ত এমএ হান্নান
  • স্বাধীনতা সংগ্রাম পুরস্কারপ্রাপ্ত শাহ আলম
  • লেখক দিরেন্দ্র কুমার রায়
  • ধর্ম সংস্কারক স্বামী নিগমানন্দ
  • লেখক রফিকুল রশিদ
  •  প্রবাসী সরকারের সাংসদ মোঃ সহিউল্লাহ উল্লেখযোগ্য।

শাহ ভালাই, শাহ আলাই ও এনায়েত উল্লাহর নাম উল্লেখযোগ্য। পুণ্য আত্না ইসলামের ঝান্ডাবাহক দরবেশ মেহের আলী শাহ-এর নামের সাথে সঙ্গতি রেখে মেহেরপুর নামকরণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যতদূর জানা যায় তাতে মেহের আলী অত্যন্ত প্রভাবশালী খ্যাতিমান আধ্যাত্নিক ব্যক্তি হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন।

মেহেরপুরের উত্তরে কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলা, পূর্বে ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলা এবং পশ্চিমে ভারত।

মেহেরপুর জেলার উপজেলা সমূহ

মেহেরপুর জেলার উত্তরে কুষ্টিয়া জেলা, পূর্বে চুয়াডাঙ্গা জেলা, দক্ষিণে যশোর জেলা এবং পশ্চিমে ঝালকাঠি জেলা অবস্থিত। গাংনী উপজেলা, মেহেরপুর সদর উপজেলা, মুজিবনগর উপজেলা এবং পালং উপজেলা সহ চারটি উপজেলা নিয়ে মেহেরপুর গঠিত।

মেহেরপুর জেলার থানার নাম

মহাকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবার পর মেহেরপুরে ৫ টি থানা অন্তভূর্ক্ত হয় যথা-করিমপুর, গাংনী, তেহট্ট, চাপড়া ও মেহেরপুর সদর। তবে বর্তমানে এ জেলা চারটি(৪) উপজেলা বা থানা নিয়ে গঠিত।

  1. মেহেরপুর
  2. গাংনি
  3. মুজিবনগর
  4. পালং ইত্যাদি।

মেহেরপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

মেহেরপুর জেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত, যেখানে সবুজ মাঠ, ঝিরিঝিরি নদী এবং পাহাড়ি টিলা ল্যান্ডস্কেপ রয়েছে। জেলাটি ঐতিহাসিক মুজিবনগর মেমোরিয়াল গ্রাউন্ড, একটি প্রাচীন দুর্গের ধ্বংসাবশেষ এবং ১৭ শতকের একটি মসজিদের ধ্বংসাবশেষের মতো অনেক আকর্ষণীয় স্থানের আবাসস্থল। বন্যপ্রাণী উত্সাহীরা বিভিন্ন বিরল পাখি এবং প্রাণী দেখতে কাছাকাছি বিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অন্বেষণ করতে পারেন।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আশীর্বাদপুষ্ট একটি সুন্দর জেলা মেহেরপুর। এটি জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদী সহ বাংলাদেশের সবচেয়ে মনোরম কিছু স্থানের আবাসস্থল। অত্যাশ্চর্য লালমাই পাহাড় এবং লালমাই জাতীয় উদ্যানের সবুজ সবুজের মতো পরিবার বা বন্ধুদের সাথে ঘুরে দেখার জন্য মেহেরপুরে প্রচুর জায়গা রয়েছে। জেলাটিতে বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনও রয়েছে, যেমন মহাস্থানগড়ের প্রাচীন শহরের ধ্বংসাবশেষ, যার একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতকে।

মেহেরপুরের বিখ্যাত স্থানঃ

নামঅবস্থান
মুজিবনগর স্মৃতি মিনারমুজিবনগর স্মৃতিসৌধ মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার যেখানে গঠিত হয় সেখানে এই স্মৃতিসৌধটি গড়ে তোলা হয়েছে।
ঝিলের জলে শাপলাএটি মেহেরপুর সদর এ অবস্থিত
ঐতিহ্যবাহী নীলকুঠিআমঝুপিতে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী নীলকুঠি
আম্রকাননএটি মেহেরপুর জেলার মেহেরপুর সদর থানা তে অবস্থিত
স্বামী নিগমানন্দ আশ্রমমেহেরপুর জেলার আরেকটি উল্লেখযোগ্য স্থান স্বামী নিগমানন্দ আশ্রম। এটি কুতুবপুর, মেহেরপুর এ অবস্থিত।
জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়মেহেরপুর গাংনী উপজেলার শান্ত গ্রামে গড়ে ওঠা এক ব্যতিক্রমধর্মী বিদ্যাপীঠ জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়
বল্লভপুর চার্চআমদহ গ্রামের স্থাপত্য নিদর্শন বল্লভপুর চার্চ
শেখ ফরিদের দরগাহমেহেরপুর জেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ গ্রাম হল বাগোয়ান।এ গ্রামে দরবেশ খান জাহান আলীর সম সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় শেখ ফরিদের দরগাহ।
মুজিবনগর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজএটি মানিক নগরে অবস্থিত।
নীলকুঠি জাদুঘরমেহেরপুর আমঝুপি নীলকুঠি জাদুঘর যা 77 একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত
জেনারেল হাসপাতালমেহেরপুরে রয়েছে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল
মেহেরপুর জেলার দর্শনীয় স্থান

এছারাও এখানে রয়েছে

  • ৭ টি মহাবিদ্যালয়
  • ৩১৬ টি সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • ৩ টি টেকনিকাল স্কুল ও কলেজ।

মেহেরপুরের বিখ্যাত খাবার

মেহেরপুর তার সুস্বাদু রন্ধনপ্রণালীর জন্যও পরিচিত, যেখানে দই কাচালু (দই দিয়ে ভাজা ভাত) এবং ভাটি মাচ (পেঁয়াজ দিয়ে ভাজা মাছ) এর মতো খাবার রয়েছে। জেলাটি তার স্থানীয় সংস্কৃতির জন্য গর্বিত, যা বরি-ভর্তা (সবজির সাথে মিশ্রিত শুকনো মসুর ডাল পেস্ট) এবং ইলিশ-মাছ (সরিষার গ্রেভিতে রান্না করা ইলিশ মাছ) এর মতো ঐতিহ্যবাহী খাবারে সমৃদ্ধ। মেহেরপুর একটি সুন্দর জেলা যেখানে সত্যিই প্রত্যেকের জন্য কিছু দেখার, জানার, শেখার আছে।

মেহেরপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্নের নাম সাবিত্রী ও রসকদম্ব মিষ্টি (Sabitri and Rosh Kodom Sweet)। ১৮৬১ সাল থেকে সমগ্র বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে গেছে সাবিত্রী ও রসকদম্ব নামের দুইটি রসহীন (নীরস) মিষ্টির সুনাম।

মেহেরপুর কোন জেলায় অবস্থিত ?

মেহেরপুর বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের একটি শহর। প্রশাসনিক ভাবে এটি খুলনা বিভাগের মেহেরপুর এর সদরদপ্তর।

মেহেরপুর জেলা কত বর্গ কিলোমিটার ?

এ জেলার আয়তন ১৫.৯ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৪৩,১৩৩ জন।

মুজিব নগর সরকারের প্রধান সেনাপতি কে ছিলেন ?

মুজিব নগর সরকারের প্রধান সেনাপতি ছিলেন জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী।

মেহেরপুর জেলার এমপি ?

মেহেরপুর ১ আসনের এমপি ফরহাদ হোসেন দোদুল, ২ আসনের এমপি মোঃ সাহিদুজ্জামান খোকন।

মেহেরপুর কোন বিভাগে অবস্থিত ?

মেহেরপুর খুলনা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত একটি আধুনিক জেলা।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *