সোহরাওয়ার্দী উদ্যান | সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কোথায় 2024

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান( Sohrawardi Udyan) বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত একটি বড় পার্ক। এটি বিভিন্ন বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদ প্রজাতির আবাসস্থল। এটি স্থানীয় এবং পর্যটকদের জন্য একইভাবে একটি জনপ্রিয় স্থান হয়ে উঠেছে।

এটি ঢাকার সবচেয়ে কোলাহলপূর্ণ পার্কগুলির মধ্যে একটি। যেখানে সাপ্তাহিক ছুটির দিন বা বিশেষ অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বিপুল পরিমান ভিড় থাকে। লোকেরা পার্কের নির্মলতা এবং শান্তি উপভোগ করতে আসে, সেইসাথে এটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যতা উপভোগ করতে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান স্বাধীনতা স্তম্ভ

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

রাজধানী ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত মনোরম ও শান্তিপূর্ণ একটি পার্ক হল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান (Sohrawardi Udyan)। এটিকে শুধু পার্ক বলা যায় না, কেননা বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভের জন্য একটি জমায়েত স্থান হিসাবে বহুল পরিচিত।

সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই এটি বাংলাদেশের একটি মূল্যবান স্থান হয়ে উঠেছে। সবুজ ঘাস, প্রাণবন্ত ফুলের সারি সারি গাছ এবং ছায়া দেওয়ার জন্য প্রচুর গাছে ভরা পার্কটিতে সমস্ত বয়সের মানুষ বিশ্রাম নিতে পারে।

পার্কের কেন্দ্রবিন্দুতে একটি বড় পুকুর রয়েছে যা একটি শান্ত পরিবেশ এর অনুভূতি প্রদান করে থাকে। এর আশে পাশের দর্শনীয় স্থান সমূহ হলঃ

স্থানের নামবিস্তারিত
রেসকোর্স ময়দানবর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
শিশু পার্কজাতীয় শিশু পার্ক
শাহবাগ জাদুঘরবাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
স্বাধীনতা জাদুঘরবাংলাদেশ স্বাধীনতা জাদুঘর
আশে পাশের দর্শনীয় স্থান

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সাধারণত রমনা পার্ক নামে বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত একটি বৃহৎ সবুজ শহুরে উদ্যান।

জাতীয় জাদুঘর, স্বাধীনতা জাদুঘর এবং ঢাকা শিশু পার্ক এর কাছাকাছি শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, এটি স্থানীয় এবং পর্যটকদের জন্য একইভাবে একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কোথায়

রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহর এর শাহবাগ বাস স্ট্যান্ড থেকে রমনা পার্ক অভিমুখী ২ মিনিটের দুরত্তে অবস্থিত। এই ঐতিহাসিক উদ্যান টির উত্তরে ঢাকা শিশু পার্ক এবং দক্ষিনে বাংলা একাডেমী ও হাইকোর্ট ময়দান। একইদিকে পশ্চিমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্বে রমনা পার্ক এর অবস্থান।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কোথায় অবস্থিত

  • ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই উদ্যান টি বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর এবং সু-পরিচালিত পার্কগুলির মধ্যে একটি। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান শাহবাগ থানার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর টিএসসির একদম সাথেই অবস্থিত। সহজ কথায় এটি রমনা ১ নং গেট এবং ঢাকা শিশু পার্ক সংলগ্নে অবস্থিত।

বাংলাদেশে এই উদ্যানের একটি দীর্ঘ ও বিশেষ ইতিহাস রয়েছে। এটি ছিল ১৯৫২ সালের বিখ্যাত ভাষা আন্দোলনের স্থান, যা ছিল বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রথম সফল আন্দোলন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এর ইতিহাস

এই উদ্যান বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধু ঢাকার প্রাচীনতম পার্কই নয়, এটি দেশের অগ্রগতির প্রতীকও বটে।

১৯৬০ এর দশকের শেষদিকে প্রতিষ্ঠিত, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানটি বাংলাদেশকে আধুনিকীকরণ এবং পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার একটি বৃহত্তর প্রকল্পের অংশ ছিল।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে পার্কটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে যা ঢাকার সৌন্দর্য ও সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা নিতে চাওয়া যে কোনো ব্যক্তির জন্য একটি অত্যাবশ্যক ভ্রমন গন্তব্য হয়ে উঠেছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক এবং দেশের জাতীয় পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। পার্কটির একটি দীর্ঘ এবং অনন্য ইতিহাস রয়েছে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় একটি আশ্রয়স্থল হিসাবে পরিবেশন করা হয়েছিল। এটি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়েছিল এবং স্থানীয় এবং পর্যটকদের জন্য একইভাবে একটি জনপ্রিয় স্থান ছিল।

তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান নামে খ্যাত এই উদ্যান এ শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চ এর সেই ঐতিহাসিক ভাষণটি দিয়েছিলেন। তার সেই ডাকে হাজার হাজার বীর বাঙালি সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিলেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পার্কটি সমস্ত বয়সের দর্শকদের জন্য আরও অ্যাক্সেসযোগ্য এবং আনন্দদায়ক করার জন্য ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে৷ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঢাকার একটি প্রধান আকর্ষণ।

তাছাড়া পার্কটি বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ এবং স্বাধীনতা জাদুঘর এর আবাসস্থল। সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও, এই উদ্যান এখনও স্থানীয় এবং পর্যটক উভয়ের জন্য অবকাশ যাপনের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান।

কিভাবে যাবো

বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত এবং ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এ ঘুরতে আসা যায়। বেশ কিছু জনপ্রিয় পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (বাস) সার্ভিস এবং সিএনজি রয়েছে। এসবের মাধ্যমে সহজেই এই ঐতিহাসিক উদ্যান এ যাওয়া যাবে।

তবে বাসে আসা তুলনামূলক সহজ ও খরচ কম। চলুন জেনে নিই একনজরে এখানে আসা বাস সম্পর্কে।

যাত্রা শুরুর স্থানআসার উপায়
মিরপুর
বিহঙ্গ, দিশারী, ট্রান্সসিল্ভা, শিকড়, হিমাচল, বাহন, নিউ ভিশন ইত্যাদি
গাবতলি/ সাভারগাবতলি ৮নং,বঙ্গবন্ধু ও এয়ারপোর্ট ট্রান্সপোর্ট সহ মিরপুর এর সকল বাস
গুলিস্তান/পল্টনশাহবাগ অভিমুখী সকল বাস যেমন, বিহঙ্গ, শিকড়, হিমাচল, দিশারী।
রামপুরা/বাড্ডারমজান, তরঙ্গ প্লাস ইত্যাদি
মৌচাক/মালিবাগরমজান, তরঙ্গ প্লাস
নারায়নগঞ্জমেঘলা পরিবহন এবং হিমাচল
গাজীপুর/ এয়ারপোর্টবঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট এ সরাসরি, বলাকা পরিবহনে কাকরাইল নেমে রিক্সা অথবা রমজান বাস
ধানমন্ডিমিডল্যান্ড, দিশারী, মেঘলা,ট্রান্সসিল্ভা, বাহন
যাওয়ার উপায়

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন নামকরণ করা হয়

১৯৭৪ সালে, পার্কটির নামকরণ করা হয়েছিল বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের নামে, এবং তারপর এটিকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নামে একটি জাতীয় উদ্যান করে গড়ে তুলা হয়েছে যেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক হিসাবে স্বীকৃত।

তাছাড়া, পার্কটি ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয়-দফা আন্দোলন এবং পরবর্তী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

  • পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে বিশিষ্ট বাঙালি রাজনীতিবিদ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নামে। যিনি ১৯৫৬ সাল থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অনেক অবদান রেখেছেন। তার নামের স্বীকৃতি স্বরূপ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান কে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আখ্যায়িত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই উদ্যানের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। ১৯৭১ সালে এটি ছিল মুজিবনগর অপারেশনের স্থান, যা দেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

সেই থেকে পার্কটি জাতীয় গর্বের প্রতীক, বাংলাদেশের জনগণের সাহসী ত্যাগ এবং স্বাধীনতার জন্য তাদের সংগ্রামের স্মারক হিসাবে আজও একটি স্মৃতিস্তম্ভ দাড়িয়ে আছে।

প্রশ্নঃ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জাদুঘর কোথায়?

উত্তরঃ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নামে প্রতিষ্ঠিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্বাধীনতা জাদুঘর অবস্থিত।

প্রশ্নঃ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রবেশ মূল্য বা টিকেট মূল্য কত ?

উত্তরঃসোহরাওয়ার্দী উদ্যান এ প্রবেশ করতে কোন প্রকার টিকিট ক্রয় করতে হয় না। তবে জাদুঘর এ প্রবেশ করতে হলে জন প্রতি ২০ টাকা করে টিকেট কাটতে হয়।

প্রশ্নঃ রেসকোর্স ময়দান কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ রেসকোর্স ময়দান যার বর্তমান নাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, যেটি ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত। সহজভাবে বলতে গেলে এটি রমনা পার্ক এর পশ্চিম গেইট এর একদম সাথে অবস্থিত।

রেসকোর্স ময়দান in english

রেসকোর্স ময়দান in english Sohrawardi Udyan

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *