লালমনিরহাট জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত | লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি

4/5 - (2 votes)

লালমনিরহাট জেলা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অবস্থিত একটি সীমান্তবর্তী জেলা। ২৫.৪৮ ডিগ্রী থেকে ২৬.২৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮. ৩৮ ডিগ্রী থেকে ৮৯.৩৭ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যে এ জেলার অবস্থান।

এ জেলার উত্তরে ভারত পশ্চিম বঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা দক্ষিণের রংপুর জেলা পূর্বে কুড়িগ্রাম ভারতের কোচবিহার পশ্চিমে রংপুর ও নীলফামারী জেলার অবস্থান উত্তর ধরোলা নদী ও দক্ষিণে তিস্তা নদী প্রবাহিত।

লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি |লালমনিরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত
লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি | লালমনিরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত?
জেনে নিনঃ নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত

লালমনিরহাট জেলা

প্রাচীন জনপদ মুসলিম দের তীর্থস্থান এই লালমনিরহাট জেলা। রাসুল পাক (সাঃ) এর মামা বিবি আমিনার চাচাতো ভাই আবু আক্কাস (আঃ) খ্রিস্টপূর্ব ৬২০- ৬২৬ বাংলাদেশে আসেন ইসলাম প্রচার করতে।

সে সময় হুজুর পাক( সঃ) জিবিত থাকা অবস্থায় তার নির্দেশে লালমনিরহাটে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এটাই এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রথম মসজিদ হিসেবে খ্যাত, যেটি রয়েছে এই লালমনিরহাট এ।

এ জেলার আয়তন ৪৭৯.১৩ বর্গকিলোমিটার, এবং এ অঞ্চলে বসবাসরত মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ ২৮ হাজার ৪০৬ জন।বাংলাদেশ সাক্ষরতার প্রেক্ষাপটে এ জেলার শিক্ষার হার ৭১%, অর্থাৎ প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৭১ জন শিক্ষিত।

জেনে নিনঃ জামাল্পুর জেলা সম্পর্কে বিস্তারিত

যা অন্যান্য জেলার সাথে তুলনা করলে এ জেলার মানুষ তুলনামূলক ভাবে শিক্ষিত। এ জেলা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অবস্থিত একটি সীমান্তবর্তী জেলা। ২৫.৪৮ ডিগ্রী থেকে ২৬.২৭ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮. ৩৮ ডিগ্রী থেকে ৮৯.৩৭ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমার মধ্যে এ জেলার অবস্থান।

এ জেলার উত্তরে ভারত পশ্চিম বঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা দক্ষিণের রংপুর জেলা পূর্বে কুড়িগ্রাম ভারতের কোচবিহার পশ্চিমে রংপুর ও নীলফামারী জেলার অবস্থান উত্তর ধরোলা নদী ও দক্ষিণে তিস্তা নদী প্রবাহিত।

লালমনিরহাট জেলার ইতিহাস

লালমনিরহাট জেলায় রয়েছে বেশ সমৃদ্ধ ইতিহাস। এই জেলার নাম কেন লালমনিরহাট হয় তার অনেক কয়টি কারন রয়েছে। যেমন অনেকেই মনে করে যে, মাটির নিচে লাল পাথর পাওয়া গিয়েছিল এজন্য এর নাম লালমনি হয়েছে।

অন্য আরেকটি কারণ হলো ১৭৮৩ সালে কৃষকদের অধিকার আদায়ের জন্য লালমনি নামের একজন মহিলা কৃষক নেতা নুরুল দিন কে সাথে নিয়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীদের ও জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের জীবন উপসর্গ করে।

সেই থেকে এই জেলার নাম হয় লালমনি। কালের বিবর্তনে হাট শব্দটি লালমনি শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে লালমনিরহাট হয়। লালমনিরহাট জেলার প্রকৃতি অপরূপ সুন্দর এখানকার গ্রামের মেঠো পথ, শহরের নিস্তব্ধ রাস্তাঘাট এক অনন্য প্রাকিতিক সৌন্দর্য বহন করে চলছে।

লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি

লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি দের মধ্যে অন্যতম হলেন শেখ ফজলুল করিম, স্বনামধন্য কথা সাহিত্যিক আহসানুল্লাহ হক দুলু তিনি সাবেক উপমন্ত্রী, এভারেস্ট জয়ী মুসা ইব্রাহীম অন্যতম। এছাড়াও রয়েছেন ফরহাদ হোসেন, জয়নুল আবেদিন সরকার ও কাজি শেখ রেয়াজ উদ্দিন। এই সকল মনিষীগণ যুগ যুগ ধরে লালমনিরহাট এর বিখ্যাত ব্যক্তি হিসাবে গণ্য হয়ে আছেন।

লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
জেনে নিন বাংলাদেশের সব জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি দের সম্পর্কে
লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিকর্মস্থল ও পেশা
১।ফরহাদ হোসেনলালমনিরহাট জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তিনি একাধারে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং সমাজ সেবক। বিখ্যাত এই মানুষটির জন্ম কালিগঞ্জে।
২।শেখ ফজলুল করিমতিনি একজন সাহিত্যিক এবং কবি।
৩।আহসানুল্লাহ হক দুলুতিনি সাহিত্যিক এবং সাবেক উপমন্ত্রী।
৪।মুসা ইব্রাহীমতিনি বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী।
৫।সাথীরা জাকিতিনি সাবেক বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের একজন ক্রিকেটার।
৬।করিম উদ্দিন আহমেদতিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা।
৭।নুরুজ্জামান আহমেদতিনি সাবেক সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী।
৮।সালেহ উদ্দিন আহমেদতিনি সাবেক সংসদ সদস্য।
৯।জয়নুল আবেদীন সরকারতিনিও সাবেক সংসদ সদস্য।
১০।কাজি শেখ রেয়াজ উদ্দিনশিক্ষাবিদ এবং সাহিত্যিক।
লালমনিরহাটের বিখ্যাত ব্যক্তি

লালমনিরহাট জেলার থানা সমূহ

লালমনিরহাট জেলায় পাঁচটি উপজেলা রয়েছে এগুলো হলো লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালিগঞ্জ, হাতীবান্ধা এবং পাটগ্রাম উপজেলা।

  • লালমনিরহাট সদর
  • আদিতমারী
  • কালিগঞ্জ
  • হাতীবান্ধা এবং
  • পাটগ্রাম উপজেলা।

লালমনিরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত

লালমনিরহাট জেলা তিনবিঘা করিডোর, দই খাওয়া, লাল পাথর, আদা ও শোলকার জন্য বিখ্যাত। শুধু তাই নয়, এ জেলার তৈরি তামাক, তিস্তা ব্রিজ এর জন্য সকলের কাছে বিখ্যাত।

আপনি কি শিক্ষা, ট্রেনের খবর, ট্রাভেল গাইড, মার্কেট গাইড সহ সকল জেলার আপডেট পেতে চান ? তাহলে আপনি উঁকি মারতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ এ!!

এছাড়াও এখানে রয়েছেঃ

  • লালমনিরহাটে রয়েছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়
  • ৩৫টি কলেজ
  • ৬৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • ৪৩ টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  • ৭৮ টি মাদ্রাসা
  • ৭৫৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • তিনটি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এবং
  • প্রায় ২০০ টি কিন্টারগার্টেন
জেনে নিন বাংলাদেশের কোন জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

লালমনিরহাট জেলায় রয়েছে বেশ কিছু জনপ্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠান হলঃ

  1. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়
  2. লালমনিরহাট সরকারি নার্সিং কলেজ
  3. হাতীবান্ধায় এস এস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
  4. সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজ
  5. লালমনিরহাট সরকারি কলেজ
  6. পাটগ্রাম সরকারি কলেজ
  7. মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজ
  8. আদিতমারী সরকারি আদর্শ কলেজ
  9. বড় খাতা ডিগ্রী কলেজ
  10. দই খাওয়া আদর্শ কলেজ
  11. হাতীবান্ধা মৌলভী আবুল হাসেম আহমেদ সিনিয়র মাদ্রাসা এবং
  12. হাতীবান্ধা মহিলা কলেজ

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে লালমনিরহাট এর দূরত্ব ৩৪৩ কিলোমিটার। ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, কল্যাণপুর, কলাবাগান, ফকিরাপুর, সায়দাবাদ, শ্যামলী এবং এয়ারপোর্ট ইত্যাদি বাস স্ট্যান্ড থেকে সহজেই যাওয়া যায়।

লালমনিরহাট আসার জন্য দূরপাল্লার এসি এবং নন এসি বাস রয়েছে। এগুলো তে সময় লাগে ৬ঃ৩০ ঘন্টা থেকে ৮ ঘন্টা। ঢাকা থেকে লালমনিরহাট এর উদ্দেশ্যে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় গাড়ি ছেড়ে যায়।

  • রেল পথের ঢাকা থেকে লালমনিহাটের দ্রুত ৫৮০ কিলোমিটার। কমলাপুর রেলস্টেশন হতে লালমনিরহাট উদ্দেশ্যে শুক্রবার বাদে প্রতিদিন রাত ৯.৪৫ মিনিতে লালমনিরহাট এক্সপ্রেস ছেড়ে আসে।

দর্শনীয় স্থান সমূহ

লালমনিরহাট জেলায় বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তার মধ্যে ৬৯ হিজরির হারানো মসজিদ, তিস্তা ব্যারেজ, লালমনিরহাট বিমানবন্দর এবং লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন অন্যতম।

এছাড়াও রয়েছেঃ

  • তিন হাট রেলওয়ে স্টেশন
  • তিন বিঘা করিডোর
  • তিস্তা রেল সেতু
  • তুষভান্ডার জমিদারবাড়
  • কাকিনা জমিদারবাড়ি
  • সিন্ধুরমতি দিঘী
  • বোতল বাড়ি
  • নওদা বাস কালিগঞ্জ
  • কবি শেখ ফজলুল করিমের বসতভিটা
  • হাতীবান্ধা শালবন
  • ঐতিহ্যবাহী সিন্ধুর মন্দির এবং
  • বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট।

লালমনিরহাট জেলার বিখ্যাত খাবার কি ?

এই জেলার বিখ্যাত খাবারের মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত খেজুরের রস, নাপা শাক এবং শোলকা। তাছাড়া এই অঞ্চলের মাটিতে আধা খুব ভালো জন্মায়।
লালমনিরহাটের সবকটা উপজেলায় কম বেশি তামাকের চাষ হয়। ক্ষতি জেনেও দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলের মানুষেরা তামাকের চাষ করে আসছে।
কারণ হলো বিনা সুদ ও জামানতে তামাক কোম্পানির ঋণ সুবিধা। সহজেই বীজ সার ও কীটনাশক পাওয়া এবং উৎপাদিত তামাক প্রক্রিয়াজাত কোম্পানির মাধ্যমে বিক্রি করা হয় এ জন্য মানুষ তামাক চাষ করেন।

লালমনিরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

লালমনিরহাট জেলায় বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তার মধ্যে হল ৬৯ হিজরির হারানো মসজিদ, তিস্তা ব্যারেজ, তিস্তা রেলসেতু, তুষভান্ডার জমিদারবাড়ি, কাকিনা জমিদারবাড়ি, সিন্ধুরমতি দিঘী, লালমনিরহাট বিমানবন্দর এবং লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের নাম কি?

লালমনিরহাট জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ উল্যাহ মহোদয়।

লালমনিরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত

লালমনিরহাট জেলা তিনবিঘা করিডোর, দই খাওয়া, লাল পাথর, আদা ও শোলকার জন্য বিখ্যাত।

লালমনিরহাট জেলার এমপি কে ?

বর্তমান লালমনিরহাট ১ আসনের এমপি মোতাহার হোসেন। তিনি আওয়ামী লীগ এর একজন জন প্রতিনিধী।

লালমনিরহাট জেলা কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ?

রংপুর বিভাগের অন্তর্গত লালমনিরহাট ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

লালমনিরহাট কোন খাবারের জন্য বিখ্যাত

এই ঐতিহাসিক জেলাটি সিদল নামের এক ধরনের খাবারের জন্ন বিখ্যাত। এছারাও এখানকার হারিভাঙ্গা আমের অনেক জনপ্রিয়তা ও উৎপাদনশীলতা লক্ষ করা যায়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *