বোটানিক্যাল গার্ডেন মিরপুর | বোটানিক্যাল গার্ডেন কোথায় অবস্থিত
বোটানিক্যাল গার্ডেন (Botanical Garden) এর অপর নাম জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান যার পূর্ণ নাম বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্ভেরিয়াম ( Bangladesh National Harberium )। বলে রাখা ভাল যে পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠা করেন বিজ্ঞানী অ্যারিস্টটল আনুমানিক ৩৪০ খ্রিস্টপূর্বে।
এটি রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত এবং প্রায় ২০৯ একর জমি নিয়ে গঠিত দেশি বিদেশি নানা প্রজাতির বৃক্ষের এক বিশাল সমাহার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। আজকে আমরা জানতে চলেছি বোটানিক্যাল গার্ডেন কোথায়, কিভাবে যাবেন, টিকেট প্রাইস, বন্ধের দিন এবং সময়সূচী নিয়ে বিস্তারিত।
আপনি কি শিক্ষা, ট্রেনের খবর, ট্রাভেল গাইড, মার্কেট গাইড সহ সকল জেলার আপডেট পেতে চান ? তাহলে আপনি উঁকি মারতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ এ!!
বোটানিক্যাল গার্ডেন | Botanical Garden
বোটানিক্যাল গার্ডেন বা জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান খ্যাত এটি বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার একদম পাশেই অবস্থিত। চিড়িয়াখানার একদম পাশাপাশি হওয়াতে প্রতিদিন নানা পেশার ভ্রমন পিপাসুদের আনাগোনা লক্ষ করা যায়।
শিশু – কিশোর, যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, সকল বয়সী মানুষের জন্য একটি আকর্ষণীয় ভ্রমন স্পট হিসাবে খ্যাত। কেনই না হবে না, এখানে ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৮১০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। এসবের মধ্যে ফল, ফুল, বনজ এবং বিভিন্ন ঔষধি গাছ অন্যতম।
সোনারগাঁও জাদুঘর সম্পর্কে বিস্তারিত
বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রাচীনতম বোটানি ক্যাল গার্ডেন হচ্ছে জামালপুর জেলার ভোঁসপাড়া এলাকায় অবস্থিত চৈতন্য নার্সারি। যেটি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ১৮৯৪ সালের দিকে।
কালের পরিক্রমায় তার মৃত্যুর পর বাগানটি বিনষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে মোট দুইটি Botanical Garden বা উদ্ভিদ উদ্যান রয়েছে। একটি ময়মনসিংহে অন্যটি ঢাকার মিরপুরে এবং রয়েছে বলদা গার্ডেন নামক আর একটি উদ্ভিদ অভয়ারণ্য।
- বোটানিক্যাল গার্ডেন মিরপুর
- বোটানিক্যাল গার্ডেন ময়মনসিংহ
- বলদা গার্ডেন
বোটানিক্যাল গার্ডেন মিরপুর
১৯৬১ সালে মিরপুর -১ এ বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার অপর পাশে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় বোটানিক্যাল গার্ডেন ( National Botanical Garden )। বাংলাদেশের সকল গার্ডেন এর মধ্যে এই গার্ডেন এর প্রসারতা অনেক বেশি ( প্রায় ৮৪ হেক্টর) এবং এখানে প্রায় পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি প্রজাতির বৃক্ষ রয়েছে। যার ফলে এটিকে বাংলাদেশের জাতীয় বোটানিক্যাল গার্ডেন হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
সামরিক জাদুঘর সম্পর্কে বিস্তারিত্ত জানুন
এখানে থাকা বেশ কিছু গাছের প্রজাতির কথা তুলে ধরা হলঃ
- কর্পূর
- আন্থুরিয়াম
- ডম্বিয়া
- শ্বেত রঙ্গন
- ফার্ন জাতীয় উদ্ভিদ
- শ্বেত চন্দন
- আফ্রিকান টিউলিপ সহ অনেক অনেক প্রজাতির গাছ।
বোটানিক্যাল গার্ডেন টিকেট প্রাইস
বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ করতে জনপ্রতি ২০ টাকা দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। ছোট বাচ্চাদের টিকেটের মূল্যের পরিমান ১০ টাকা নির্ধারণ করে হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলোচনা সাপেক্ষে ৫ টাকা টিকেট প্রাইস ধার্য করা হয়েছে।
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হলেও নগরায়ন এ জেলাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। যেখানেই যাই শুধু স্থাপনা আর বিল্ডিং, কোথাও তিল পরিমান জায়গা পাওয়া যায় না ঠিক তখনই আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই ঢাকার এই বোটানিক্যাল গার্ডেন এর কথা।
ঢাকার মধ্যে সবুজের রাজ্যে ভ্রমন করতে এই গার্ডেন অনন্য। এর জনপ্রিয়তা এতই যে প্রতি বছর হাজারো হাজার পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন।এটি প্রতিদিন সকাল নয়টা (০৯) থেকে বিকাল পাঁচটা (০৫) পর্যন্ত খোলা থাকে।
বোটানিক্যাল গার্ডেন সময়সূচী
- ঢাকা বোটানিক্যাল গার্ডেন মার্চ মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বন্ধের দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল টা পর্যন্ত খোলা থাকে। অপরদিকে শীতকালীন সময়সূচী অনুসারে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪ঃ৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকে।
বার | সময় |
---|---|
শনিবার | সকাল ৯টা – বিকাল ৫টা |
রবিবার | বন্ধের দিন |
সোমবার | সকাল ৯টা – বিকাল ৫টা |
মঙ্গলবার | সকাল ৯টা – বিকাল ৫টা |
বুধবার | সকাল ৯টা – বিকাল ৫টা |
বৃহস্পতিবার | সকাল ৯টা – বিকাল ৫টা |
শুক্রবার | সকাল ৯টা – বিকাল ৫টা |
ছুটির দিন | খোলা থাকে |
বোটানিক্যাল গার্ডেন বন্ধের দিন
বাংলাদেশ বোটানিক্যাল গার্ডেন মিরপুর সপ্তাহের সকল দিন খোলা থাকে না। এটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকলেও রবিবার বন্ধ থাকে। তবে অন্যান্য ছুটির দিন খোলা থাকলেও বলা যায় বন্ধের দিন রবিবার (Sunday)। এখানে রয়েছে বিভিন্ন বিরল প্রজাতির জীব-জানোয়ার।
জেনে নিন ঢাকা শিশু পার্ক খোলা নাকি বন্ধ
বোটানিক্যাল গার্ডেন কিভাবে যাবো
রাজধানী ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে সরাসরি এই গার্ডেন এ যাওয়া যাবে। বাসে করে যাওয়া সহজ তবে চাইলে সিএনজি, রিক্সা, প্রাইভেট কার এ করেও যাওয়া যাবে।
প্রথমে ধকার মিরপুর আসতে হবে তারপর এখান থেকে যেকোনো ভাবে জেতে পারবেন। বাসে আসা তুলনামূলক সহজ। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বাসে তালিকা প্রকাশ করা হলঃ
যাত্রা শুরুর স্থান | কিভাবে যাবেন |
---|---|
মিরপুর ১ | মিরপুর ১,২ হতে সনি সিনেমা হল হয়ে নুর এ মক্কা বাস, আলিফ বাস, দিশারি বাসে করে কিংবা গাবতলি মাজার রোড হয়ে লেগুনা করে। |
মিরপুর অন্য সেক্টর | মিরপুর ১০,১১,১২,১৩,১৪ বা অন্য সেক্টর হতে রাজধানী, রবরব, অসিম বা অন্য যেকোনো বাসে করে সনি সিনেমা হল হয়ে সরাসরি রিক্সা বা আলিফ বাসে ১০-১৫ টাকা ভাড়া। |
গাবতলি /সাভার | গাবতলি থেকে সরাসরি কোন বাস না থাকলেও লেগুনা করে সরাসরি। সাভার থেকে রাজধানী পরিবহন এবং ইতিহাস পরিবহনে করে সনি সিনেমা হল।তারপর চিড়িয়াখানা গামি যেকোনো বাস। |
রামপুরা /বাড্ডা | এখান থেকে সরাসরি আসতে হলে অছিম বা আলিফ বাসে আসতে হবে। |
নারায়ণগঞ্জ | নারায়ণগঞ্জ হতে সরাসরি আসতে হলে হিমাচল পরিবহন এ করে মিরপুর ১০, ত তারপর চিড়িয়াখানা অভিমুখি যেকোনো বাস।তবে মেঘলা পরিবহনে করে কলাবাগান নেমে মিরপুর গামি যেকোনো বাসে আসা যাবে। |
উত্তরা/এয়ারপোর্ট | এখান থেকে প্রজাপ্রতি বা পরিস্থান বাসে মিরপুর ১ নেমে চিড়িয়াখানা গামি সকল বাসে করে। |
ফার্মগেট | এখান থেকে শিকড়, হিমাচল,বিহঙ্গ সহ মিরপুর ১০ অভিমুখি সকল বাস এবং নিউ ভিশন, তানজিল বাসে করে সরাসরি। |
মোহাম্মদপুর | সরাসরি আসতে দিশারী কিংবা ট্রান্সসিল্ভা বাস অথবা মিরপুর গামি সকল বাস। |
নিউ মার্কেট / ধানমন্ডি | সরাসরি বাস হল মিরপুর মেট্রো এবং দিশারী পরিবহন |
মালিবাগ/কমলাপুর | এখান থেকে আসার সবচেয়ে সহজ রাস্তা হল বাসে করে সরাসরি আয়াত বাস। |
গুলিস্তান | তানজিল, দিশারী, নিউ ভীষণ ইত্যাদি। |
জেনে নিন ঢাকা শিশু মেলা সম্পর্কে বিস্তারিত
কোথায় থাকবেন ও খাবেন
এখানে বেশ কিছু থাকার হোটেল রয়েছে। এই এরিয়ার আশেপাশের হোটেল গুলোতে খরচ একটু বেশি তাই খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে সর্তক থাকতে বলা হচ্ছে। সনি সিনেমা হল কিংবা মিরপুর ১ এর দিকে হোটেল খরচ ও কম খাবার খরচ ও কম পড়বে।
বোটানিক্যাল-গার্ডেন ময়মনসিংহ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীদের বিনা খরচে প্রবেশের অগ্রাধিকার রয়েছে। এছারাও দেশের যেকোনো প্রান্তের শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট কুপন সংগ্রহ করে ভেতরে প্রবেশ করতে হবে।
ময়মনসিংহ বোটানিক্যাল গার্ডেন সপ্তাহের সকল দিনই খোলা থাকে। প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল ৯টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয় এবং রবি থেকে বৃহস্পতি প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
বোটানিক্যাল গার্ডেন ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ বোটানিক্যাল গার্ডেন ময়মনসিংহ জেলার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর ২৫ একর জায়গা নিয়ে ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি জনপ্রিয় স্থান। এটি বোটানিক গার্ডেন্স কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল ( BGCI ) কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দেশের একমাত্র গার্ডেন যেখানে ছোট- বড় প্রায় ১১৭৮ টিচ গাছ সহ মাঝারি আকারের প্রায় ৫০০০ গাছ রয়েছে। মোট প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৬০০টি।
বোটানিক্যাল গার্ডেন কি খোলা ?
উত্তরঃ বোটানিক্যাল গার্ডেন করোনাকালিন সময়ে বন্ধ থাকলেও বর্তমানে ২০২৩ সাল এর জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূর্ণরূপে খোলা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা ( ১০টা – ৫টা) এটি খোলা থাকে রবিবার বন্ধের দিন ছাড়া।
বোটানিক্যাল গার্ডেন এ কি কি আছে?
বর্তমানে ৩৩০ মিটার লম্বা বটগাছটি দেড় একর জমির উপর শত শত ঝুরি নিয়ে বিরাজমান। এই বটগাছটি ছাড়াও বোটানিক্যাল গার্ডেনে রয়েছে মেহগনি, সাল, সেগুন, বট, অশ্বত্থ, শিমূল, পিয়াল ও নানা প্রজাতির পাম গাছ। এছারাও রয়েছে দারুচিনি, লবঙ্গ, জায়ফল, তেজপাতা, রবার ও নানা প্রকার ঔষধি বৃক্ষও।